স্বপন কুমার ঢালী ।। বরগুনার বেতাগীতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত ৫ বছর ৫ মাস ধরে
স্কুল ফিডিং বন্ধ রয়েছে।এতে উপকূলীয় এ উপজেলার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ক্লাশে ধরে রাখতে পারছে না। ঝড়ে পড়ছে শিক্ষার্থী। ঘটছে ফলাফল বিপর্যায়। ফলে দিন দিন শিক্ষার মান কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছে স্থাণীয়রা। দেড়লাখ জনসংখ্যা অধ্যূষিত এ উপজেলার ১টি
পৌরসভাসহ ৭টি ইউনিয়নে ২০০৯ সালে স্কুল ফিডিং কার্যক্রম শুরু হয়। অজ্ঞাত কারণে ২০১২ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য আর কোন
ধরণের স্কুল ফিডিং এর ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে এ অঞ্চলের ১২৩ টি প্রতিষ্ঠানের ২০ হাজার ৮১৯ জন শিক্ষার্থী সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ক্লাশে থেকে ক্ষুধায় ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। মধ্য বেতাগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মোসাঃ তমা জানায়,‘ ক্ষুধায় আমাগো ক্লাশে মন বসেনা।’ বেতাগী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসাঃ জেসমিন আক্তার বলেন,‘স্কুল ফিডিং না থাকায় শিক্ষকদের পক্ষে শ্রেণিকক্ষে কোমলমতি শিশুদের ধরে রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে।’ ধ্রæবতারা আন্তজার্জিক ভাষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (ডিলি)’র কেন্দ্রিয় ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ সাইদুল
ইসলাম মন্টু বলেন,‘ অনেক অভিভাবকেরই সঙ্গতি নেই। তাই সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসা উচিত।’ ২০১৫ সালে স্থানীয় উপজেলা পরিষদ (ইউজেডজিপি)’র সহযোগিতায় শিক্ষা খাতের
উন্নয়ন বিষয়ক এক কর্মশালায় গুরুত্বারোপের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট বিবাগে লিখিত সুপারিশ
পাঠানো হয়। ২০১৬ সাল তৎকালীন প্রাথমিক গণশিক্ষা সচিব পাশ্ববর্তী বামনা উপজেলা সফরকালে তাঁর নিকট জোড়ালোভাবে দাবী জানানো হয়। ২০১৭ সালে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যাললের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ হেলাল প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে স্কুল ফিডিং কি ধরণের ভূমিকা রাখে এ বিষয় একটি জরিপের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তিনিও একই কথা ব্রক্ত করে সরকারের কাছে জোড়ালো সুপারিশ করেন। তবুও অধ্যাবধি
কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা টানা ক্লাশ করে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। সহকারি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালাম বলেন,‘ স্কুল ফিডিং চালু হলে শিশুরা লেখা পড়ায় মনোযোগী ও দিনের শেষ বেলাও তাদের ক্লাশে ধরে রাখা সম্ভব হবে।
বৃদ্ধি পাবে শিক্ষার মান। জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন,‘ শিক্ষার মান উন্নয়নের এর কোন বিকল্প নেই।’ উপজেলা নির্বহী অফিসার মোঃ রাজীব আহসান বলেন,‘ এখানকার আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপচে স্কুল ফিডিং চালু করা জরুরি হয়ে পড়ছে। এ জন্য সকলের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’